বিদ্রোহী নজরুল

          বিদ্রোহী নজরুল(শাকিল মাহমুদ)



আজ ২৫শে মে ২০২০।১৮৯৯ সালের এই দিনে পৃথিবীর বুকে নেমে আসে দুখোমিয়া।জীবন যুদ্ধে নানা সংগ্রাম করে বড়ো হওয়া দুখো একদিন কাজী নজরুল রুপে আবির্ভাব হয়।কখনো ছাত্র কখনো শিক্ষক কখনো মুয়াজ্জিন কখনো কবি কখনো প্রেমিক কখনো লেখক কখনো গায়ক নানা রুপে নিজেকে উঝার করে বিলিয়ে দেয়।আমি শাকিল মাহমুদ, তার পাগলপ্রায় ভক্ত।প্রথম কবিতা পড়া প্রভাতী এরপর তার অনেক কবিতা পড়া হয় বিশেষ করে;অগ্নিবীণা,সাম্যবাদী, ফনী-মনসা,মরুভাষ্কর,
ইসলামী কবিতা,সর্বহারা ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ পড়া হয়।তার বিদ্রোহী  কবিতা তাকে বিদ্রোহী নাম দিয়েছিল।নজরুল উপন্যাস লিখেছেন চারটি তারমধ্যে তিনটি পড়া;মৃত্যুক্ষুধা, বাঁধন হারা,কুহেলিকা। তার নাটক আলেয়া পড়া হয়েছে।নজরুল গান লিখেছেন অনেক কিন্তু নজরুলগীতি বেশি একটা শোনা হয়না তবুও কিছু গান মাঝে মাঝে শুনি তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য;

★আলগা করো গো খোপার বাধন।
★মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী।
★দূর দ্বীপবাসিনী।ইত্যাদি

তার ইসলামী গানগুলো খুব ভালো লাগে,বিশেষ করে"ও মোন রমজানের ঐরোজার শেষে এলো খুশির ঈদ" গানটি।
তার অনেক প্রবন্ধ পড়া হয়েছে কিন্তু নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাই নামগুলো মনে নেই।অনুবাদ জগতেও তার পদচারণ ছিল সমান তালে;দিওয়ানে হাফিজ,কাব্যে আমপারা,রুবাইয়াৎ-ই- ওমর খৈয়াম ইত্যাদি। তার ছোট গল্প তিনটি পড়া;শিউলি মালা,রিক্তের বেদন,ব্যাথার দান।
নজরুল সর্বদা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম তুলেছে,তার কবিতায় খুঁজে পাওয়া যায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, সাম্যবাদ ইত্যাদি।

★এখন আসি মূল কথায়★
মাঝে মাঝে দেখা যায় অনেকে বলে নজরুল সম্পর্কে তারা সব জানে তাদের ছোটবেলার বইতে তার কথা পড়তে পড়তে তারা মুখস্থ করে ফেলেছে।এখন কথা হলো আমাদের স্কুল জীবন আর কলেজ জীবনের বইতে আমরা তার সম্পর্কে কতটুকু জানতে পারি;যদি ধরি ২০টি কবিতা তার আমরা পড়েছি,তার এতোগুলো কবিতার মাঝে।আমি উপরে যা লিখেছি তা আমি পড়েছি তবুও আমি জানতে পারিনি আর তারা ২০টা কবিতা পড়ে নজরুল মুখস্থ!তারা কতটুকু জানে তার একটা কাহিনী বলি,

★আমার একটা ফেসবুক আইডি ছিল যার নাম ছিল মৃত্যুক্ষুধা।তো কিছু লোক আমাকে মেসেজ দিত এবং গালাগালি করতো। একদিন বাধ্য হয়ে তাদের সাথে আলাপ করি আসল ব্যাপার সম্পর্কে জানতে;তারা আমাকে নাস্তিক দাবি করে,আমি হতবাক। তারা বলে তুমি কেন এ নাম রাখলে?তুমি কি মানুষের মৃত্যু দেও তুমি কি খোদা?আমি বুজলাম তারা ক্ষুধাকে খোদা বলছে।কারন ক্ষ এর উচ্চারণ খ এর মতো তাই।আমি তাদের বলি কাজী নজরুল কে চিনেন? তারা বললো হ্যাঁ,সে আমাদের জাতীয় কবি।তার লেখা পড়েছেন?কতো পড়েছি,কেন?বলতে পারবেন সে কতগুলো উপন্যাস লিখেছেন?লিখেছেন তো শখানেক।আচ্ছা চারটার নাম বলুন।সে কিছু বললো না।আমি বুঝলাম তাই তাকে বললাম মৃত্যুক্ষুধা তার লেখা উপন্যাস।আর সে চারটিই উপন্যাস লিখেছেন শত নয়।আর ওটা খোদা নয় ক্ষুধা মানে খিদা।তাদের মুখে কোন কথা ফুটলো না।এই সব বাঙালীদের বলি,নজরুলের জন্ম আর মৃত্যু সাল জানা থাকলেই তার সম্পর্কে জানা যায় না।আপনি না জানলে প্রকাশ করুন। না তা কেন করবেন,আপনারা তো জ্ঞান বিতরণ করবেন যদিও আপনার মাথা খালি তবুও।

★কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় কবি আর আমাদের জাতীয় সংগীত রবী ঠাকুরের।নজরুলের কবিতা চল্ চল্ চল্ করা হয় রণ সংগীত,যেটা সেই ছোট্ট বেলায় বইয়ে একবার দেখেছিলাম তারপর আর পাইনি।নজরুলের রণ সংগীত আমরা কিছু মানুষ জানলেও ছোটরা কখনোই জানে না।জাতীয় সংগীত স্কুলে মুখস্থ করালেও রণ সংগীত কখনোই স্কুলে মুখস্থ করায় না।নজরুল নামে মাত্র আমাদের জাতীয় কবি।আসলে নজরুলের কবিতা রণ সংগীত না করলেও চলতো মানুষ এটাকে কিছু মনে করতো না।আসলে আমরা গুনীদের কদর করি কাগজে কলমে,বাস্তবে নয়।কিন্তু দিনশেষে আমি খুশি হই যখন দেখি কেউ কবির কবিতার লাইন বা তার জন্ম বা মৃত্যু দিনে কিছু লিখে। আর যাই হোক কবিকে মনেতো রেখেছে।আমরা হয়তো তাকে তার ন্যায্য সম্মান দিতে পারিনি কিন্তু আসা আছে ভবিষ্যতের সন্তানরা তাকে তার প্রাপ্য সম্মান দিবে।

(অনেক কিছুই লিখতে মন চায় কিন্তু আমি ভালো লেখক নই)


#শাকিল


Comments

Popular Posts